
বুকে ব্যথা নিয়ে নগরের তিনটি হাসপাতালে ভর্তির জন্য ছোটাছুটি করে শেষ পর্যন্ত গাড়ির মধ্যেই মারা গেছেন চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের এক নেতা। গত মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
পরিবারের সদস্য ও সংগঠনের নেতারা জানিয়েছেন, নগরীর বায়েজিদ থানা শাখা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম ছগীর (৫৭) মঙ্গলবার সকাল সোয়া ১১টার দিকে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
ছগীরের স্বজন এস এম রোকন উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সন্ধ্যার পর উনার (ছগীর) অবস্থার অবনতি হলে আমরা তাঁকে প্রথমে চট্টগ্রামের জিইসি মোড় এলাকার মেডিক্যাল সেন্টার নামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) বন্ধ ও চিকিৎসক না থাকার অজুহাতে রোগীকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পরে তাঁকে একই এলাকার মেট্রোপলিটন হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকেও ফিরিয়ে দেওয়া হয়। সেখান থেকে পাঁচলাইশের পার্কভিউ হাসপাতালে নিলে তারা চিকিৎসা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে।’
রোকন জানান, একপর্যায়ে বায়েজিদ থানাধীন জালালাবাদ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহেদ ইকবাল বাবু সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনকে ফোন করেন। সিটি মেয়রের হস্তক্ষেপে রাত ১টার দিকে ছগীরকে পার্কভিউ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
কাউন্সিলর শাহেদ ইকবাল বাবু কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পার্কভিউ হাসপাতালে ছগীর ভাইকে ভর্তির প্রক্রিয়া চলার মধ্যেই গাড়িতে তাঁর মৃত্যু হয়।’ তিনি আরো বলেন, ছগীরের বুকে ব্যথা ছিল। করোনাভাইরাসের কোনো উপসর্গ ছিল না। তার পরও বেসরকারি হাসপাতালগুলো নানা অজুহাত দেখিয়ে তাঁকে ভর্তি করেনি। চিকিৎসা না পেয়েই ছগরীকে মরতে হয়েছে।
চট্টগ্রামের বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে করোনাভাইরাস ও সাধারণ রোগী ভর্তি করানোর সরকারি নির্দেশনা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে বেসরকারি হাসপাতালে কভিড ও নন-কভিড রোগীদের চিকিৎসাসংক্রান্ত সার্ভিল্যান্স টিম গঠন করা হয়েছে।
কয়েকটি হাসপাতাল ঘুরেও চিকিৎসা না পেয়ে আওয়ামী লীগ নেতা শফিউল আলম ছগীরের মারা যাওয়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ওই টিমের প্রধান অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মিজানুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিষয়টি আমরা জেনেছি। চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যু দুঃখজনক। দ্রুতই বেসরকারি হাসপাতালগুলো তদারকি করা হবে। গত সোমবার নগরের ১৬টি বেসরকারি হাসপাতালে ৮২৪টি সিট খালি ছিল। তার পরও কেন রোগী ভর্তি করানো হলো না তা খতিয়ে দেখা হবে।’
আপনার মতামত লিখুন :